শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০০৯

অপমানের পুরস্কার

এক দেশে ছিলেন এক মহান যোদ্ধা। বার্ধক্যপীড়িত হলেও তিনি যেকোনো প্রতিযোগীকে যুদ্ধে হারাতে সক্ষম ছিলেন। তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল দূরদূরান্ত অবধি, ওই ভূমির সর্বত্র। অনেক শিক্ষার্থী তার কাছে ভিড় করতেন যুদ্ধকৌশল শিখবার জন্য।

একদিন ওই গ্রামে এক অখ্যাত তরুণ যোদ্ধার আবির্ভাব ঘটল। সে পণ করল, সেই-ই হবে প্রথম ব্যক্তি যে কিনা ওই বৃদ্ধকে পরাজিত করবে। শক্তি-সামর্থ্যের পাশাপাশি তার ছিল যেকোনো প্রতিপক্ষকে কালিমা দিয়ে স্বার্থোদ্ধার করবার এক ভূতুড়ে ক্ষমতা। সে অপেক্ষা করত প্রতিপক্ষের প্রথম পদক্ষেপের। এরপরই সে বিদ্যুৎগতিতে দুর্বিনীত আক্রমণ চালিয়ে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করে দিত। প্রথম পদক্ষেপের পর তার সাথে কখনো কোনো যোদ্ধাই আর টিকে থাকতে পারত না।

ওই তরুণ বিষয়ে অবহিত তার ছাত্রদের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও বৃদ্ধ শিক্ষক হাসিমুখে তার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন। শুরুতেই তরুণ যোদ্ধা বৃদ্ধ শিক্ষককে প্রবল টিটকারি করতে আরম্ভ করল। সে এমনকি তার মুখে ময়লা ও থুথু পর্যন্ত নিক্ষেপ করল। ঘণ্টাকালব্যাপী ওই তরুণ মানুষের জানাশোনার মধ্যে যতরকম গালি আছে, তা প্রয়োগ করে তাকে অপদস্থ করল। কিন্তু বৃদ্ধ শিক্ষক নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকলেন। ক্রমশ তরুণ যোদ্ধার উদ্যম অবশেষে এসে ঠেকল এবং সে ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তারই হার হয়েছে, এটা বুঝতে পেরে তরুণটি লজ্জায় অধোবদন হয়ে সরে গেল।

নিশ্চয়ই আপত্তিকর কিছু একটা ঘটেছে, যেজন্য তিনি এহেন দুর্বিনীত তরুণের সাথেও যুদ্ধ করলেন না-- এই ভেবে তার সমস্ত ছাত্র তাকে ঘিরে ধরল ও জানতে চাইল, ‘আপনি কীভাবে এত অপমান সহ্য করতে পারলেন ? কীভাবেই-বা আপনি তাকে দূরে ঠেলে দিলেন ?
‘যদি কেউ তোমাকে কোনো উপঢৌকন দিতে আসে এবং তুমি যদি সেটা গ্রহণ না-কর, তাহলে ওই জিনিসের মালিকানা তার নিজেরই হয়-- বৃদ্ধ শিক্ষক জবাব দিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন