শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০০৯

একাগ্রতা

ধনুর্বিদ্যায় একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জনের পর এক দাম্ভিক যুবক দক্ষ তীরন্দাজ হিসেবে সর্বজনবিদিত এক জেনগুরুর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। প্রথম চেষ্টায় একটি দূরবর্তী বৃষের চোখে আঘাত করে ও দ্বিতীয়বারে ওই তীর বিযুক্ত করে সে তার বিশেষায়িত কারিগরি দক্ষতা প্রদর্শন করল। ‘ওইখানে’, যুবকটি বৃদ্ধ জেনগুরুকে বলল, ‘দেখুন তো পাল্লা দিতে পারেন কিনা’! গুরু ধনুক উত্তোলন না-করে ধীরস্থিরভাবে ওই তীরন্দাজ যুবকের প্রতি তাকে অনুসরণ করে পর্বতারোহণ করতে আহ্বান জানালেন। বৃদ্ধ পণ্ডিতের অভীষ্টের প্রতি কৌতূহলবশত যুবকটি তাকে অনুসরণ করে ঊর্ধ্বারোহণ করল, যতক্ষণ না তারা একটি গভীর খাদের নিকটবর্তী হলো ; যেটিতে ছিল একটি দুর্বল গাছের গুঁড়ির কম্পমান সেতু। শান্ত পদক্ষেপে ওই টলটলায়মান ও অতি বিপজ্জনক সেতুর মাঝামাঝি গিয়ে বৃদ্ধ একটি দূরবর্তী গাছকে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে নিয়ে ধনুক উত্তোলন করলেন এবং সমস্যামুক্তভাবে একটি তীর ছুড়লেন। ‘এবার তোমার পালা’, সাবধানে পশ্চাতাবরোহণের পর নিরাপদ স্থানে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন। আপাতদৃষ্টে ভীতিপ্রদ, সুগভীর ও ইশারারত অতল গহ্বর দেখে ওই যুবক গাছের গুঁড়িতে উঠে কোনো শক্তিই করতে পারল না, যেজন্য তার তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হলো। বৃদ্ধ তার প্রতিযোগীর দুরবস্থা আন্দাজ করলেন এবং বললেন, ‘ধনুর্বিদ্যায় তোমার অনেক দক্ষতা, কিন্তু মন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা তোমার অত্যল্প, যেজন্য তুমি ব্যর্থ হলে।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন